বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর বিজেপির চক্রান্ত এবং কেন্দ্রীয় সরকারের “ভাষা-সন্ত্রাস”-এর বিরুদ্ধে সরব হল কলকাতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদী ডাকের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার শহরের সুকিয়া স্ট্রিটে আয়োজন করা হল এক রক্তদান শিবিরের। আয়োজন করেছিল সংগঠন ‘উদ্যোগ’। এদিনের রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, পুরপিতা অয়ন চক্রবর্তী, যুবনেতা মৃত্যুঞ্জয় পাল, জয় মুখোপাধ্যায়, প্রবন্ধ রায়, আসফাক আমেদ, প্রিয়াঙ্ক পাণ্ডে, সৌরভ রায়, ভাস্কর চৌধুরী, সোমনাথ সাহা, সমীর ঘোষ , অভিজিৎ রায়, বুলবুল শ প্রমুখ।
রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হয়ে কুণাল ঘোষ সরাসরি বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, “সারা দেশে এখন বাংলা ও বাঙালিকে লক্ষ্য করে ভাষা সন্ত্রাস চালাচ্ছে বিজেপি। যে গান শুনে উঠে দাঁড়াতে হয়, সেই জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন’ লেখা হয়েছিল বাংলায়। তবুও এখন বাংলা বললেই বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে— এটা অন্যায়, ন্যাক্কারজনক।আপনি কি খাবেন, কি খাবেন না, কি পরবেন, সব তারা ঠিক করে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আজকের রক্তদান কেবল সামাজিক কাজ নয়, এটি এক প্রতীকী প্রতিবাদ, বিজেপির সেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে যা ভাষা ও জাতপাতকে অস্ত্র করে তুলছে।
গুজরাটের পুলিশের নির্দেশিকার প্রসঙ্গ তুলে কুণাল বলেন, একদিকে নারীশক্তি যুদ্ধবিমান চালাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে! বিজেপি একদিকে ‘বেটি বাঁচাও’ বলছে, অন্যদিকে মহিলাদের পার্টিতে যেতে বারণ করছে। এটা দ্বিচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বকে কুণাল ঘোষ বিশেষভাবে তুলে ধরে বলেন, বিরোধীরা পাড়ায় সমস্যা নিয়ে বসে থাকেন, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাড়ায় গিয়ে সমাধান করেন। আজ বাংলার স্বার্থে যেভাবে তিনি প্রতিবাদী ভূমিকা নিচ্ছেন, তা গোটা দেশের কাছে এক উদাহরণ হয়ে থাকবে। এই মূহুর্তে নির্বাচন হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ২৫০ এর বেশি আসন নিয়ে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।এসআইআর প্রসঙ্গে বিজেপিকে এদিন কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, যদি ভোটার লিস্ট ভুয়ো হয় তাহলে যে ভোটার লিস্টে লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন তারাও ভুয়ো!
সিপিএমকে নিশানা করে এদিন কুণাল বলেন, এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। পাড়ায় যা কিছু ঘটনা ঘটছে তা প্রকাশ্যে চলে আসছে। বাম জমানায় সোশ্যাল মিডিয়া উন্নত থাকলে তাদের আর ৩৪ বছর রাজ্য চালাতে হত না! ওটা ৩ বছরেই শেষ হয়ে যেত। একের পর এক গণহত্যা, একের পর এক গণধর্ষণ, ইংরাজী তুলে দেওয়া, কম্পিউটার ঢুকতে না দেওয়া- এইসব ৩৪ বছর ধরে তারা করেছে। সুকিয়া স্ট্রিটের রক্তদান শিবির ছিল শুধুই স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মসূচি নয়, ছিল এক প্রতীকী রাজনৈতিক প্রতিবাদ। বক্তৃতায় উঠে এল ভাষার অধিকার, বাঙালির সম্মান ও একটি বৃহত্তর সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা।
আরও পড়ুন – অভিজিৎ সরকার মৃত্যু তদন্ত: অভিযুক্তদের জামিন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত
_
_
_
_
_
_
_
_
_