বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উদ্যোগে আজ থেকে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ (Amader Para Amader Samadhan) কর্মসূচি। প্রথম দিনে কলকাতা পুরসভার (KMC) ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের সমস্যার কথা জানতে ভবানীপুর কলেজে আয়োজিত এই শিবিরে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত এই শিবির চলে। কেউ প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক উদ্যোগের, কেউ জানালেন পাড়ায় রাস্তা চওড়া না হওয়ার সমস্যার কথা। এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattopadhyay) ও ফিরহাদ হাকিমসহ (Firhad Hakim) প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
এদিন ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ অসীম বসু জানান, খুব কম সময়ের মধ্যে আয়োজিত এই কর্মসূচিকে এলাকার মানুষ যেভাবে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন সেটা দারুণ ব্যাপার। অনেকেই নিজেদের সমস্যা নিয়ে এসেছেন। মানুষের সমাগম এই ক্যাম্পের সার্থকতা প্রমাণ করে দিয়েছে। এদিন ভবানীপুর কলেজে আয়োজিত ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এলাকার মানুষ কেউ জল সমস্যার কথা জানিয়েছেন তো কেউ আবার মানবিক ভাতা সংক্রান্ত আবেদন নিয়েও এসেছেন। কেউ বলছেন রাস্তার ধারে যে লাইটের পোস্ট হয়েছে সেখানে বিদ্যুতের তারগুলো এমন ভাবে জড়ানো থাকে সেটা একদিকে যেমন দৃষ্টিকটু, আবার অন্যদিকে পথচলতি মানুষের অসুবিধা হয়। এদিন ভবানীপুর এলগিন রোড এলাকার বেশ কয়েকজন হকার ব্যবসার সময় মাথার উপরে ছাউনির অনুরোধ করেছেন বলে দেখা গেছে। সকলের সমস্যাই নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর। দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
এদিনের কর্মসূচিতে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সারা বাংলার সঙ্গে কলকাতা পুরসভাতেও পাড়ায় সমাধান শুরু হল।। আমরা প্রশ্ন শুনছি, নোট করছি, হাতে হাতে সেটা সমাধান করছি। সমস্ত ডিপার্টমেন্টের এক্সিকিউটিভ অফিসাররা আছেন। একেক দিন, একেক জায়গায় আমরা এই সমাধান করব। মানুষের যে অসুবিধা গুলো আমরা নোট করে নিচ্ছি সেগুলো আমরা ঠিক করে দিয়ে সকলকে জানিয়ে দেব।’ এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চান টক টু মেয়রের সঙ্গে “আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির পার্থক্য কোথায়। মেয়র জানান, টক টু মেয়রে সারা কলকাতা থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে আসে। মতো সমাধান করছে পুরসভা। আর এখানে একেক জন মানুষকে ডেকে নিয়ে বসে তাঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। রাজ্য সরকারি কাজের জন্য ইতিমধ্যেই টাকা বরাদ্দ করে দেওয়ায়, যার জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। এক কথায়, পাড়ায় বসে পাড়ার সমস্যার সমাধান করা হবে।
শনিবার ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাস্তার বেহাল দশা সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যজুড়ে রাস্তা খারাপ, এটা কথা ঠিক নয়। সম্প্রতি তিনি ঝারগ্রাম এবং বাঁকুড়া জেলায় তার নিজের অভিজ্ঞতার কথাও বলেন। বিরোধীদের কটাক্ষকে পাত্তা না দিয়ে বর্ষীয়ান মন্ত্রী জানান, কিছু কিছু রাস্তা খারাপ হয়ে পড়েছে। উদাহরণ হিসেবে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের একটি রাস্তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তবে রাজ্যজুড়ে সব রাস্তার বেহাল দশা নয়। বরং আগের থেকে রাস্তার অনেক উন্নতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি এদিন এসআইআর থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলা বিরোধী আচরণের বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছেন তিনি।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–