কলকাতার ঐতিহাসিক আলিপুর চিড়িয়াখানা (Alipur Zoo) থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছে ৩২১টি প্রাণী! এই ঘটনায় প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ তুলে ‘স্বজন’ নামে একটি শহরভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেছে। ওই সংস্থার দাবি, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের শেষে চিড়িয়াখানায় ৬৭২টি প্রাণী ছিল, কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের শুরুতেই সেই সংখ্যা নেমে আসে ৩৫১-এ।
এই গরমিল উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের (CZA) বার্ষিক রিপোর্ট ‘Annual Inventory of Animals in Zoos’-এর তথ্য থেকে। মামলাকারী সংস্থা জানিয়েছে, গত ৩০ বছর ধরেই আলিপুর চিড়িয়াখানার বার্ষিক রিপোর্টে প্রাণীসংখ্যা নিয়ে এমন গড়মিল চলছে। কখনও সংখ্যা হঠাৎ বেড়েছে, আবার কখনও কমে গেছে শত শত প্রাণী ‘অজানা’ কারণে। বিশ্ব অ্যানিমাল প্রোটেকশন ইন্ডিয়ার বিশেষজ্ঞ শুভব্রত ঘোষের আশঙ্কা, এটি শুধু হিসাবের ভুল নয়, বরং বেআইনি বন্যপ্রাণী পাচারের ইঙ্গিতও হতে পারে। যদিও চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, এটি শুধুই গণনার গলদ।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের মার্চে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী চিড়িয়াখানায় (Alipur Zoo) ১,১৮৪টি প্রাণী রয়েছে বলে জানানো হয়। তবে তালিকায় বেঙ্গল টাইগার, এশিয়াটিক লায়ন, গন্ডার, হাতি প্রভৃতি প্রাণীর কোনও উল্লেখ নেই, অথচ দর্শনার্থীদের সাম্প্রতিক ভিডিওতে সেগুলো দেখা গেছে। মামলায় আরও অভিযোগ, চিড়িয়াখানার জমি বিক্রি করে বাণিজ্যিক প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা চলছে। ৩৪এ বেলভেডিয়ার রোডের তিন একরের জমি নিয়ে ইতিমধ্যেই ই-টেন্ডার ডেকেছে রাজ্য হাউজিং কর্পোরেশন। ওই জমিতেই রয়েছে চিড়িয়াখানার হাসপাতাল, রেসকিউ সেন্টার ও ময়নাতদন্ত ইউনিট।
স্বজন নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রাণী ও জমি কমিয়ে চিড়িয়াখানার অস্তিত্ব সংকুচিত করার চক্রান্ত চলছে। বর্তমানে ‘লার্জ জু’ থেকে নামিয়ে এটি ‘মিডিয়াম সাইজ জু’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ২৪ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, গত ১০ বছরের ইনভেন্টরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিক আদালত এবং যাবতীয় গরমিলের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হোক।
আরও খবর: খেজুরি কাণ্ডে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের আবেদন খারিজ, চিকিৎসকের জবানবন্দি রেকর্ডের নির্দেশ হাই কোর্টের
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–