এক প্রান্তে সুবিশাল ভারত, অন্য প্রান্তে প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউ গিনি- দুজনের মাঝের ভৌগোলিক দূরত্বের সঠিক হিসাব দিতে গেলে গুগল করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু অচিরেই দুই মহাদেশকে মিলিয়ে ঐতিহাসিক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন বাংলার বাঙালি অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty)। ‘ফাটাফাটি’ নায়িকার সিনেমা এবার অস্কার সফরে। পাপুয়া নিউ গিনি ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হয়েছে বিজুকুমার দামোদরনের দ্বিভাষিক (হিন্দি ও ইংরেজি) ছবি ‘পাপা বুকা’ (Papa Buka) যা অস্কারের ফিচার ফিল্ম সেকশনের নমিনেশনে (Academy Award Nominations) জায়গা করে নিয়েছে। উচ্ছ্বসিত এই ছবির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ঋতাভরী। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, সিনেমায় প্রয়োজনে দু-দেশের ভাষা থাকলেও তাঁর অভিনীত চরিত্রটি বাঙালি হওয়ায় বাংলাতেই কথা বলেছে। কিন্তু বাংলায় কাজ না পাওয়ার কারণেই কি এই ধরণের কাজে মন নায়িকার? ঋতাভরীর স্পষ্ট উত্তর, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির যা অবস্থা, মিলিয়ে মিশিয়ে কাজ না করলে হবে না।
টেলিপর্দার ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ সিরিয়াল থেকে উঠে আসা নায়িকা শুধুমাত্র সিনেমা করতে হবে বলেই যে কোনও ছবিতে কাজ করতে আগ্রহী নন। ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ কিংবা ‘ফাটাফাটি’র মতো সিনেমায় অভিনয় করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন শুধুমাত্র বিনোদন নয় নিজের কাজের মাধ্যমে সামাজিক বার্তা দিয়ে নিজের প্রতিভা ও দক্ষতার ছাপ রাখতে চান তিনি। কিন্তু বাংলা সিনেমায় যখন তিনদিনে ছ কোটি বা তিন সপ্তাহে প্রায় কুড়ি কোটির ব্যবসা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, ক্রাইম থ্রিলার থেকে ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে সিনেমা হচ্ছে, সেখানে দাঁড়িয়ে টলিউডে এত কম কেন দেখা যায় ঋতাভরীকে? তিনি নিয়মিত ডাক পান না বলেই কি এবার অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে মন? অভিনেত্রী বলছেন, “আসলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির পসারটা একটু তো কমেছে। আর মানুষ কিন্তু ভুলভাল ছবি দেখলে যথেষ্ট রেগে যাচ্ছে। তাই তেমন কোনও কাজ করতে চাই না। আমি ভাল ছবি করতে চাই। আমি দক্ষিণী ছবি, বহু হিন্দি ছবির প্রস্তাব ফিরিয়েছি। কারণ, সেগুলোর প্রত্যেকটাই খারাপ। শুধু প্রচারে থাকতে ছবি করতে চাই না। সে ক্ষেত্রে, আমার শিল্পের প্রতি অন্যায় করা হত। আমি তেমনই ছবি করব, যেগুলোর একটা মেসেজ আছে।” ‘পাপা বুকা’তে এক বাঙালি ইতিহাসবিদের চরিত্রে দেখা যাবে ঋতাভরীকে। ছবিতে তিন মূল চরিত্র – একজন মালয়ালি, অন্যজন পাপা বুকা আর আর বাঙালি চরিত্রে বঙ্গকন্যা। ছবির অস্কার নমিনেশনের (Academy Award Nomination) খবর পাওয়ার পরই ‘বহুরূপী’ অভিনেত্রী কিন্তু ধন্যবাদ জানিয়েছে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে, কারণ টলিউডের কাজ করার সৌজন্যেই তাঁর পরিচিতি বেড়েছে এবং এখান থেকে তিনি এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে। বাঙালি অভিনেত্রীকে ইতিমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির সতীর্থরা।
–
–
–
–
–
–
–
–