রাজ্য সরকার বাংলা ভাষাকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক, হেনস্থা ও রাজনৈতিক চক্রান্তের বিরুদ্ধে বিধানসভায় (Assembly) প্রস্তাব আনল। বিধানসভার কার্যবিবরণীর ১৬৯ ধারা অনুযায়ী এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Shobhandev Chatterrjee)। মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার দু’ঘণ্টা করে মোট চার ঘণ্টা ওই প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে। শেষ দিনের আলোচনায় অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, মাতৃভাষা ব্যবহারকারীর সংখ্যার নিরিখে বাংলা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম এবং এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা। ১৯৫০ সালে সংবিধান চালুর পর থেকেই অষ্টম তফসিলে বাংলা অন্তর্ভুক্ত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.০৩ শতাংশ মানুষ বাংলায় কথা বলেন। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও অসমের বরাক উপত্যকায় সরকারি ভাষা বাংলা হলেও ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, মেঘালয়, মিজোরাম, দিল্লি, মহারাষ্ট্রসহ একাধিক রাজ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাভাষী মানুষের বাস।
প্রস্তাবে অভিযোগ তোলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর শারীরিক আক্রমণ ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়ে কাজ করা পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ বলে অপমান করা হচ্ছে, জোর করে আটকে রাখা হচ্ছে এবং পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠে এসেছে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা হচ্ছে।
শাসক তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, দেশের বৃহত্তম শাসক দল এ ধরনের প্রবণতাকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে মদত দিচ্ছে। বাংলাভাষীদের বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা চলছে। প্রস্তাবে এই ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, বাক্-স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে বাংলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ।
বিধানসভা (Assembly) সূত্রে খবর, প্রস্তাবটি নিয়ে মঙ্গলবার থেকে আলোচনা শুরু হবে। অধিবেশনে শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষের বক্তব্যই গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই প্রস্তাব ঘিরে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নতুন করে সংঘাত তৈরি হতে পারে।
–
–
–
–