নিট (NEET) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন নির্মাণ শ্রমিক শুভম (Shubham)। ধৈর্য্য, অধ্যাবসায়কে সঙ্গী করেই নেট উত্তীর্ণ হয়ে সবাইকে চমকে দিলেন ওড়িশার নির্মাণ শ্রমিক। ওড়িশার খুর্দার মুদুলিডিয়া গ্রামের বাসিন্দা শুভম অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সংসার সংগ্রামে মাত্র ১৯ বছরেই তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল শ্রমিক তকমা। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য শুভম নিট (NEET) পরীক্ষা দেওয়ার পর ফল প্রকাশের অপেক্ষা না করে কাজের খোঁজে বেঙ্গালুরু চলে যান। সেখানে তিনি নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে দৈনিক মজুর কাজ শুরু করেন।
জাতীয় যোগ্যতা ও প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সকলের কাছে এক অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ওড়িশার পরিযায়ী শ্রমিক শুভম।
নিট পরীক্ষায় তফসিলি উপজাতি (ST) বিভাগে ১৮,২১৩ তম স্থান অর্জন করেছেন এবং ওড়িশার এমকেসিজি (MKCG) মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডাক্তারি (MBBS) কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। পরীক্ষা দেওয়ার পর ফলাফল পর্যন্ত অপেক্ষা করার সময় ছিল না, সঙ্গী ছিল নিত্য দিনের অনটন। তিন মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করে তিনি প্রায় ৪৫,০০০ টাকা উপার্জন করেন, যার মধ্যে ২৫,০০০ টাকা তিনি সঞ্চয় করতে সক্ষম হন। কিন্তু এক ফোনেই যেন জীবন বদলে গেল শুভমের।
জুলাই মাসের এক সকালে শুভম যখন নির্মাণস্থলে কাজ করছিলেন, তখন তাঁর শিক্ষক বাসুদেব মহারানা ফোন করে বলেন, “মিষ্টি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও, তুমি নেটে উত্তীর্ণ হয়েছ।” খুশির এই খবর পাওয়ার পর আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি শুভম। এতদিনের পরিশ্রম সফল হল তাঁর।
শুভম জানিয়েছেন, “আমি জানতাম না যে আমি আরও লেখাপড়ার খরচ বহন করতে পারব কিনা। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম ফলাফল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত অথবা আমি পরবর্তী কী করব তা সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত, অন্তত আমি আমার পরিবারের জন্য কিছু উপার্জন করতে পারব।” কৃতী ছাত্রের বাবা সাহাদেব সবার বলেন, “আমাদের সীমিত আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমরা ওকে পড়াশোনা থেকে কখনও নিরুৎসাহিত করিনি।”
জীবনে চলার পথে স্বপ্নকে কখনও পিছনে ফেলে এসো না, কঠিন থেকে কঠিনতর পরিশ্রম করলে সাফল্য একদিন আসেই, এই মন্ত্রকে সম্বল করেই শুভম অনুপ্রেরণার এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলেন।
–
–
–