সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি রাজ্যের: OBC মামলায় হাইকোর্টের তালিকা বাতিলে স্থগিতাদেশ

0
2

রাজ্যের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের উপর আদালতের হস্তক্ষেপ! সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায় নিয়ে চূড়ান্ত বিস্ময় প্রকাশ দেশের শীর্ষ আদালতের। প্রাথমিকভাবে এই রায়কে ভুল বলে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। নির্দেশের উপর স্থাগিতাদেশ (stay order) জারি করে মামলা ফের হাই কোর্টে (Calcutta High Court) ফেরৎ পাঠিয়ে সময় বেধে দিয়ে নিষ্পত্তির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)। সেই সঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতিকে আলাদা বেঞ্চ গঠন করে মামলা শোনার নির্দেশ দেয় সু্প্রিম কোর্ট। সেক্ষেত্রে জুন মাসের সরকারি নির্দেশ মেনেই যে কাজ হবে তা স্পষ্ট করে দেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পরেই যে রাজ্যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া দ্রুত শুরুর ইঙ্গিত দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলায় প্রথমেই প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই (CJI B R Gavai), বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন ও বিচারপতি অনভি অঞ্জারিয়ার বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্টের রায় দেখে। প্রধানবিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এটা খুবই আশ্চর্যজনক! হাই কোর্ট (Calcutta High Court) কীভাবে স্থগিতাদেশ দেয় এই মামলায়, আদতে সংরক্ষণ (reservation) একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপের অংশ।

রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রথমেই জানান এই সংরক্ষণের (reservation) উপর নির্ভর করে রয়েছে ৯ লক্ষ শূন্যপদে নিয়োগ। পাল্টা মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, সংরক্ষণের আগে ওবিসি কমিশনকে জানানো হয়নি। কোনও তথ্য যাচাই না করে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে।

সেখানেই রাজ্যের তরফে সিব্বল দাবি করেন, সেই সব প্রক্রিয়াই রাজ্যের কমিশনের তরফে সম্পূর্ণ করা হয়েছে। সেই গোটা প্রক্রিয়াকে কোনও চ্যালেঞ্জ এর আগে করা হয়নি। এমনকি তিনি তুলে ধরেন, গোটা প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয় পর্যেবক্ষণে উল্লেখ করেনি কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সোমবার সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করল। ওবিসি কমিশনের (OBC Commission) বিষয়টিতে রাজ্যকে প্রশ্ন করলেও কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে ভুল বলে পর্যবেক্ষণে জানান প্রধান বিচারপতি।

সেই সঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টে এই মামলা আগামী ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে একটি বিশেষ বেঞ্চকে এই মামলা শোনার নির্দেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি পরের সোমবার।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরে স্বাভাবিকভাবে স্বস্তি রাজ্যের। তৃণমূল আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হাই কোর্টের নির্দেশকে আইন বিরোধী উল্লেখ করে এটি চলতে পারে না বলে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এবার রাজ্য সরকারের জুন মাসের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সব প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। বিধানসভায় তা পাশ হয়েছিল। সেই মতো ওবিসিদের জন্য ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে।

সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ উঠে যেতেই রাজ্যের শিক্ষা দফতর ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত, জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টে সোমবারের স্থগিতাদেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তুত করা ওবিসি নীতির জন্য নৈতিক জয়। উচ্চ শিক্ষা দফতরে আমরা এই রায় প্রত্যাশা করেছিলাম আগেই এবং শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।