অভিযুক্ত শিক্ষক নয়, ছাত্রীকেই দোষ কলেজের! ওড়িশায় বিস্ফোরক মৃতার বাবা

0
2

মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুতে কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টকেই দায়ী করলেন ওড়িশার মৃত কলেজ পড়ুয়ার বাবা। তাঁর দাবি, কলেজ কর্তৃপক্ষের গঠিত অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি যে পক্ষপাতমূলক (biased) রিপোর্ট পেশ করেছিল তাতে দোষী করা হয়েছিল নির্যাতিতা ছাত্রীকেই। সেই মিথ্যাচার সহ্য করতে না পেরেই গায়ে আগুন দেন ওই ছাত্রী, এমনই বিস্ফোরক দাবি মেয়ের মৃত্যুর পরে করলেন তাঁর বাবা। ওড়িশা সরকারের ছত্রছায়ায় যেভাবে বিচার না পেয়ে প্রাণ দিতে হল এক ছাত্রীকে, তার প্রতিবাদে বুধবার পথে নামে নবীন পট্টনায়েকের বিজেডি (BJD)। তাদের প্রতিবাদে বিনা প্ররোচনায় রবার বুলেট (rubber bullet) দিয়ে দমন করার চেষ্টা চালায় ওড়িশার (Odisha) বিজেপি সরকারের পুলিশ। পুলিশের মারে পা ভাঙে দুই প্রাক্তন মন্ত্রীর। এই ঘটনায় প্রতিবাদে সরব নবীন পট্টনায়েক (Naveen Patnaik)।

মঙ্গলবার মৃত্যুর সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে মৃত্যু হয় ওড়িশার বালেশ্বরের ফকির মোহন কলেজের গায়ে আগুন দেওয়া ছাত্রীর। ঘটনায় নির্লজ্জ বিজেপি সরকার অধ্যক্ষকে শুধুমাত্র সাসপেন্ড করেই দায় সারার চেষ্টা চালায়। এরপরই মুখ খোলেন নিহত ছাত্রীর বাবা। তিনি দাবি করেন, কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটির (ICC) রিপোর্টের জন্যই গায়ে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল তাঁর মেয়ে। ছাত্রী অধ্যাপক তথা বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাবের যে অভিযোগ করেছিলেন তাতে কলেজের কমিটি (ICC) কার্যত অধ্যাপককে ক্লিন চিট দেয়। তৈরি হয় একটি একপেশে (biased) রিপোর্ট। যার কারণেই তাঁর মেয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পথ বেছে নেয়।

সেই সঙ্গে মৃতার বাবা আরও দাবি করেন, সেই রিপোর্টে যথেষ্ট তদন্ত না করেই রিপোর্ট পেশ করা হয়। সেখানে দোষ দেওয়া হয় নির্যাতিতাকেই। এরপর চাপে পড়ে কলেজ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে ওড়িশা পুলিশ (Odisha Police)। কিন্তু মৃতা ছাত্রীর বাবার দাবি, কলেজের তদন্ত কমিটির সব সদস্যকে তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। এই অভিযোগই তিনি জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে জানান। অন্তত তাঁর মেয়ের মৃত্যুতে চলতে থাকা এই কুপ্রথা নির্মূল হবে, এমনটা আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তবে ওড়িশায় বিজেপি জমানায় যে ধরনের নারী নিগ্রহের ঘটনা প্রতি নিয়ত প্রকাশ্যে আসছে তাতে রাজ্যের বিরোধীদলগুলি সরব। বিজেডির (BJD) পক্ষ থেকে বুধবার ওড়িশার সচিবালয় লোক সেবা ভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। সেই শান্তিপূর্ণ মিছিল প্রতিহত করতে প্রথমে জল কামান চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত ওড়িশার পুলিশ বিজেডি কর্মীদের উপর রবার বুলেটও চালায় বলে অভিযোগ করেন নবীন পট্টনায়েক।

আরও পড়ুন: রাশিয়া বয়কট ন্যাটো-র! ভারতের উপর বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা

বুধবার বালেশ্বরের ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের পাশাপাশি বিজেপি সরকারের নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করেন। সেই মিছিল প্রতিহত করতে যথেচ্ছ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও রবার বুলেট প্রয়োগ করে ওড়িশা পুলিশ। আহত হন দুই প্রাক্তন মন্ত্রী, এক মহিলা বিজেডি সাংসদ। একাধিক বিজেডি কর্মীর গুরুতর আহত হওয়ার কথাও জানান নবীন পট্টনায়েক।