বিহার নির্বাচনের আগে কোনও এক গোপন উদ্দেশ্যে তড়িঘড়ি ভোটার তালিকা সংশোধন (SIR) শুরু করেছেন নির্বাচন কমিশন। এই প্রক্রিয়া যে এনআরসি (NRC) ঘোষণার প্রাথমিক প্রস্তুতি, সেই রহস্য প্রথম ফাঁস করে বাংলার শাসক দল তৃণমূল। সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে দায়ের হয়েছে একাধিক মামলা। চাপে পড়ে সাফাই দেওয়ার কাজ শুরু নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) সাফাইতে স্পষ্ট, আদতে এসআইআর করে ভোটার তালিকায় কারচুপি করার চেষ্টা চালাচ্ছে কমিশন। কমিশনের সাফাই নিয়ে এবার দশ প্রশ্ন তৃণমূলের।
নির্বাচন কমিশন তাদের সাফাইতে জানিয়েছে, যে সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে তার চূড়ান্ত তালিকা ১ অগাস্ট প্রকাশিত হবে। যত ভোটার কমিশনের ফর্ম ফিলাপ (Form fillup) করেছেন তাঁদের সবার নাম সেই তালিকায় থাকবে। তালিকা সংশোধন ১৯৫০ সালের আইন অনুযায়ী হবে। সেইসঙ্গে পরিচয় যাচাই না হওয়া পর্যন্ত নাম বাদ যাবে না ভোটার তালিকা থেকে, সফাই দেয় নির্বাচন কমিশন (ECI)।
কমিশনের এই সাফাইতেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ (Sagarika Ghose)। কমিশনকে এক নাগাড়ে দশটি প্রশ্ন করেছেন সাংসদ। তাঁর প্রথম প্রশ্ন, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে আপনারা ভোটার তালিকা (voter list) সংশোধন ও আপডেট সম্পূর্ণ করেছিলেন। তার পরে ছয় মাসে এমন কী হয়ে গেল যা তা আবার সংশোধন প্রয়োজন হচ্ছে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, ২০০৩ সালের পর থেকে যাদের ভোটার তালিকায় নাম উঠেছে তাদের পরিচয় যাচাই করছেন আপনারা, ভুয়ো এই সন্দেহে। তবে কী গত যে পাঁচটি রাজ্যে ভোট হয়েছে সেই ভোটারদের মধ্যে ২০০৩ সালের পরে নথিভুক্ত ভোটাররা ভুয়ো ছিলেন।
তৃতীয় প্রশ্ন, আপনি পাঁচটি নথিসহ ফর্ম ফিলাপ করতে বলছেন। কী নিশ্চয়তা রয়েছে যে এই ফর্ম ফিলাপের পরে তা তালিকায় সংযুক্ত করা হবে। সেই সঙ্গে পাঁচটি নথির (document) একটিও জন্মের তারিখ ও স্থানের প্রামাণ্য নয়। তবে কেন সেগুলি চাওয়া হচ্ছে।
চতুর্থ প্রশ্ন, ২০০২-০৩ সালে নির্বাচন কমিশন (ECI) একটি বিস্তারিত যাচাই পর্ব চালিয়েছিল প্রায় এক বছর সময় ধরে। এখন তিন মাস সময়ের মধ্যে তড়িঘড়ি কীভাবে সব যাচাই (SIR) হবে।
পঞ্চম প্রশ্ন, কেন এই ভেদাভেদ করা হচ্ছে। যাদের নাম ২০০৩ সালের আগে অন্তর্ভুক্ত তাদের সঙ্গে যাদের নাম ২০০৩ সালের পরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে কী প্রভেদ।
ষষ্ঠ প্রশ্ন, তাহলে কী একটি নাগরিক তথ্য সংগ্রহ বা এনআরসি (NRC) প্রক্রিয়া চলছে। সেক্ষেত্রে দরিদ্র, প্রত্যন্ত ও বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকরা (migrant labour) কীভাবে তার অন্তর্ভুক্ত হবে।
সপ্তম প্রশ্ন, বিগত এক দশক ধরে আধার (Aadhaar) বলে এত চর্চা চালিয়েছেন। এখন আধারকে পরিচয়ের প্রামাণ্য হিসাবে গ্রহণ করছেন না।
অষ্টম প্রশ্ন, এতদিন বিরোধীদের উপর দোষারোপ করেছিলেন তথ্য যাচাই না করা নিয়ে। আপনারা কী বিহারের (Bihar) দরিদ্রতম শ্রেণির এই যাচাই পর্বে কী পরিস্থিতি সেই তথ্য যাচাই করেছেন।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে গিয়ে হারানো পদ প্রাপ্তি দিলীপের! বাড়ছে জল্পনা
নবম প্রশ্ন, আপনাদের কাছে কী এই তথ্য রয়েছে, যে গবেষণা বলছে বিহারের একটা বড় অংশের বাসিন্দাদের কাছে আপনারা যে নথি দাবি করছেন, সেই নথি নেই।
দশম প্রশ্ন, এসআইআর-এর আসল অর্থ কী স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিউ (SIR), না বিগ বসের আদেশ পালন।
–
–
–
–
–