প্রথমে বোমা মেরে শান্তি ফেরানোর দাবি, তারপর ‘দাদাগিরি’ করে ইরান বনাম ইজরায়েল (Iran vs Israel) সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা- এত কিছু করেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) কোনও জারিজুরিই ধোপে টেকেনি। আর এবার দেখা গেল ইরানে পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস নিয়ে প্রেসিডেন্টের যে দাবি তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে মার্কিন রিপোর্ট। ব্যাস, এতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন ট্রাম্প। ‘আমেরিকাকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র’ বলে দাগিয়ে দিয়ে রিপোর্টের বিরোধিতা করতে উঠে পড়ে লেগেছে হোয়াইট হাউস।
ইরান বনাম ইজরায়েলের (Iran vs Israel)সংঘর্ষের মাঝে নাক গলিয়ে আচমকাই তেহরানে আক্রমণ করে মার্কিন সেনা। ইরানের তিন পারমাণবিক ঘাঁটিতে হামলার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ইরানের পরমাণু বোমার স্বপ্ন! কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল সেখানে সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলা হচ্ছে। গুপ্তচর বিভাগের দুই কর্তার বয়ান অনুযায়ী, আমেরিকার হামলায় ইরানের পরমাণু ঘাঁটি ধ্বংস হয়নি। বড়জোর কয়েক মাসের জন্য তাদের পারমাণবিক কার্যকলাপ পিছিয়ে যেতে পারে। এর বেশি কিছু নয়। পেন্টাগনের আধিকারিকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে সম্প্রতি ইরানে আমেরিকার হামলার এক রিপোর্ট তুলে ধরে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। সেখান থেকেই বিতর্ক শুরু। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালানো হলেও তাদের ইউরেনিয়াম ভাণ্ডার এখনও সুরক্ষিত। পারমাণু কার্যকলাপে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজও সুরক্ষিত রয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে নিজের দেশ কথা বিশ্বের কাছে ‘ভুয়ো’ দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পৃথিবীর সর্বেসর্বা হওয়ার স্বপ্ন দেখার ট্রাম্পের পক্ষে এই অভিযোগ মেনে নেওয়া যে সহজ হবে না তা জানাই ছিল, সেই মতেই প্রতিক্রিয়া মিলেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, হামলার পর পেন্টাগনের তরফে একাধিক ছবি প্রকাশ করে দেখানো হয়েছে যে ফরদোতে হামলা চালানো হলেও তাতে বিশেষ ক্ষতি হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চরম আকার নিতেই হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, ‘এই ধরনের বক্তব্যের অর্থ হল রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অপমান করা। মার্কিন সেনা তাদের কাজ যথাযথ করেছে।’ নিজেদের দাবিকে সত্যি প্রমাণ করতে বলা হয়েছে, ৩০ হাজার পাউন্ডের বোমায় যদি কোথাও হামলা চালানো হয় তাহলে সেই জায়গার কী অবস্থা হয়, তা সকলেই আন্দাজ করতে পারেন।
সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগেই জানা গিয়েছিল, ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে ইরান। আর ৩০ শতাংশ হলেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে আয়াতুল্লা আলি খামেনেইয়ের দেশ। এরপরই প্রথমে ইজরায়েল এবং পরে আমেরিকা হামলা চালায়। পাল্টা জবাব দিয়েছে তেহেরান। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশের আক্রমণে ইরানের কতটা ক্ষতি হয়েছে বা কী প্রভাব পড়েছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–