বর্ণাঢ্য অভ্যর্থনায় শুক্রবার বাড়ি ফিরেছেন পাক রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি BSF জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ (Purnam Kumar Shaw)। শনিবার, নিজের বাড়িতে বসে তিনি জানান, দশদিন পরে আমি ভারতে (India) ফেরার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। সেনার চাকরি করতে গিয়ে শত্রু দেশে চলে গিয়ে নিজের দেশে ফিরতে পারব কি না তার কোনও গ্যারান্টি ছিল না।
শুক্রবার রাতে রিষড়ার বাড়িতে ফিরেছেন পূর্ণম। ফুলের মালা ,শাঁক, উলুধ্বনি, হুট খোলা গাড়িতে শোভাযাত্রা করে বাড়ি ঢোকেন তিনি। দীর্ঘদিন স্ত্রী, পুত্র ও বাবা-মাকে ছেড়েছিলেন তিনি। বাড়িতে ফেরার পরে মা দেবন্তী দেবী তাঁকে দই মিষ্টি খাইয়ে তিলক ও মালা পরিয়ে বরণ করেন। দীর্ঘদিন দেখা হয়নি, ছেলের সঙ্গে। বাবাকে কাছে পেয়ে ছেলে আর ছাড়তে চাইছে না। ভোর চারটা পর্যন্ত বাবা-ছেলে দুজনেই খেলা করেছে।
পাকিস্তানে বন্দি থাকাকালীন স্বামীর জন্য শনিবারের ব্রত করেছিলেন স্ত্রী রজনী। স্বামী বাড়ি ফিরেছেন। শনিবার সকাল সকাল ব্রত পালনে স্থানীয় মন্দিরে পুজো দেন তিনি। তিনটি শনিবার পুজো দিয়েছেন। মোট ১৬টা শনিবার পালন করবেন রজনী। তিনি বলেন, প্রতি শনি ও মঙ্গলবার মন্দিরে গিয়ে পুজো করি। কিন্তু যেদিন থেকে স্বামী পাকিস্তানে বন্দি থাকার খবর পেয়েছি, সেদিন থেকেই প্রতি শনিবার মন্দিরে পুজো দিই। এখনও পর্যন্ত তিনটে শনিবার পালন হয়েছে। অগাস্ট মাস পর্যন্ত চলবে।
আরও খবর: বিজেপির মহারাষ্ট্রে মধ্যরাত পর্যন্ত এমবিবিএস তরুণীকে গণধর্ষণ! গ্রেফতার ৩
শুক্রবার স্বামী বাড়ি ফেরার পরে বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা রজনী। তিনি বলেন, বাইশটা দিন কীভাবে কাটলো, বাড়িতে ফিরতে পারবে কিনা হতাশ হয়ে পড়েছিল । খাওয়া-দাওয়া ঠিক করে হচ্ছিল না। শারীরিক কোনও নির্যাতন তাঁকে করা হয়নি কিন্তু মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে- দাবি রজনীর। ছেলে সারারাত বাবা বাবা করেছে। এত ভালো ভাবে আমাকে দেশের মানুষ স্বাগত জানাবে তা আমি ভাবতেও পারিনি- বলেন পূর্ণম।
পূর্ণমের (Purnam Kumar Shaw) কথায়, দশদিন পর আমি আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম ভারতে ফিরতে পারব কি না। সেনার চাকরি করতে গিয়ে শত্রু দেশে চলে গেলে নিজের দেশে ফিরে আসার কোনও গ্যারান্টি ছিল না। একটা ভয় ছিল। বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছেন, কী কথা হয়েছে আমি কিছুই জানতে পারিনি। মা-বাবা, স্ত্রী সবাই চেয়েছিল আমি যাতে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারি। আমি এখন বাড়ি ফিরে এসেছি। আমার ভাগ্যে যা ছিল তা ঘটে গিয়েছে, সেটা আর মনে করতে চাই না। আমরা যখন সেনার ট্রেনিং নেই তখন আমাদের বলাই হয়, ভয় পেলে হবে না। তাই আমরা পাই না।
–
–
–
–
–
–
–
–
–